#উপলব্ধি#অনুকল্প#সৌরভ_কুমার_নাথ
#উপলব্ধি
#অনুকল্প
#সৌরভ_কুমার_নাথ
পৃথিবীতে যখন এসেছিলাম, মানুষের সাথে পরিচয় করে আসিনি। খুব কান্না করতে করতে এসেছিলাম, তবু সবাই হেসেছিল খুশি হয়ে।
প্রতি ক্ষণে ঠেকে ঠেকে এবং মা বাবার সহযোগিতায় আস্তে আস্তে বেড়েছি সময়ের নিয়মে। কখনো পুড়িয়েছি হাত কখনো মাথা ফটিয়েছি খেলার ছলে। তখনো পৃথিবী কে খুব সুন্দর লাগতো। সারাদিন খেলে বেড়ানো আর অজানা কে জানার নেশায় লুকিয়ে কখনো গঙ্গার পারে বা বন্ধুবান্ধবের সাথে বিড়ির টান। না জীবন অতটাও সোজা নয়। ক্লাসে অনেক বন্ধুর আত্মকেন্দ্রিকতা আর কিছু হৃদয় খোলা বন্ধুর সহাবস্থান বুঝতে শিখিয়েছে কোনটা ভুল কোনটা ঠিক। এভাবেই দিন দিন শিক্ষা নিয়ে চলেছি সমাজ থেকে। এখন অনেকটাই বড়ো হয়েছি। ভুল ঠিকের মাঝেও একটা অবস্থান আছে আবিষ্কার করছি এবং তা হল যুগের সাথে পা মেলানো। সবাই যা বলছে তাই সত্যি, তা সে সত্যি নাই বা হল।
এই তুই বেশি বকছিস! বেড়ে পাকা হয়েছিস না? আর বেশি বাড়াবাড়ি করিস না, নয়তো ফল ভুগতে হবে। চুপচাপ বাড়ি যা।
এখন ভয় হয়, সত্যি টা কি সত্যিই সত্যি নাকি মিথ্যেটাকে মিথ্যে বলে ভাবতে হবে। খুব জটিল এই মানসিকতাকে যে খুব সরল ভাবে মেনে চলবে সেই সঠিক এবং এই সমাজে চলার উপযুক্ত। আমি সোজা পথে হেটে বেশি দূরে পৌঁছাতে পারিনি, কারণ পথে প্রচুর জ্যাম, খুব ভিড়। বাকা পথে যাবার সাহস হয়নি। আর যে পথ চিনতে পারলে অনেক অলিগলি দিয়ে খুব সহজে গন্তব্যে পৌঁছানো যায় সেই পথ দেখলে মনে হবে ভাণ্ডারা হচ্ছে। মানুষ রূপী শয়তান এখন এই মানুষগুলোকে খুঁজে বেড়ায় আর ওই অলিগলির রাস্তা ধরে পৌঁছে দেয় গন্তব্যে, তবে কিছুর বিনিময়ে।
কিসের বিনিময়ে? কখনো অর্থের কখনো বা বিবেকের বা কখনো আত্মার। তবে তুমি জীবনযুদ্ধে কিভাবে জিতছো তা এখন অপ্রয়োজনীয়। তুমি জিতেছো কিনা তাই দেখার। আর তুমি যদি জিতে থাকো তবে তোমার মুখ নিঃসৃত বাক্যই বেদ বাক্য হবে, তোমার হাতেই থাকবে রাজদণ্ড, তুমি শাসন করবে যতসব সোজাপথে চলা পরাজিত জীবন সংগ্রামীদের। তাদের শ্রমেই তুমি আরো ধনবান হবে আর তাদের বিরোধিতার নাম হবে দ্রোহিতা। তার মৃত্যুর সময় সে বৈভব ছেড়ে যাওয়ার দুঃখে কান্না করবে কিন্তু মানুষ উৎসব করবে আর ভুলে যাবে দুদিন পরে।
কিছু মানুষ আছে যারা সেই সব বাধা অতিক্রম করে পৌঁছাবে গন্তব্যে, শোষণ যন্ত্রকে মাটির নিচে পুঁতে দিয়ে নুতন সমাজের ভীত তৈরি হবে। মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে। সেই মানুষটি যাবার সময় হাসতে হাসতে যাবে আর মানুষ তার জন্যে কাঁদবে। যদি কোনো মূর্তি তৈরি নাও হয় সেই মানুষটির জায়গা হবে মানুষের মনের মণিকোঠায় ভগবানের ঠিক পাশে।
না আমি প্রথম বা দ্বিতীয় হতে চাইনা। আমি শুধু চাই সত্যির মা যেন অকালে না মরে আর মিথ্যের বাবার অসীম দম্ভ যেন সমূলে ধ্বংস হয়ে।
Comments
Post a Comment