Posts

Showing posts from April, 2020

#চক্রশ্রেষ্ঠ_ও_সন্ন্যাসী #সৌরভ_কুমার_নাথ

#চক্রশ্রেষ্ঠ_ও_সন্ন্যাসী  #সৌরভ_কুমার_নাথ বহুদিন পূর্বের কথা। কাশী রাজ্যের এক অখ্যাত গ্রামে চক্রশ্রেষ্ঠ নামে এক ব্রাহ্মণ সস্ত্রীক বাস করিতেন। গ্রামের শিব মন্দিরে তিনি প্রধান পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করিতেন। পূজা পদ্ধতিতে কোনো ভুল না থাকিলেও, মন্দিরের অন্যান্য পূজারীদের নিকট চক্রশ্রেষ্ঠ গ্রহণযোগ্য ছিলেন না। কারণ একটাই, লোভ! চক্রশ্রেষ্ঠ ভয়ানক লোভী ছিলেন। যজমানকে ভুল বুঝাইয়া ঈশ্বরের নামে তাহার সর্বস্ব লুট করিতেন। সাধারণত দরিদ্র গ্রামবাসীরাই তাহার লোভী ক্ষুধার ভেট চরাইতেন। একদিন এক সন্ন্যাসী আসিয়া জুটিলেন মন্দিরে। বলিলেন, আমি এই মন্দিরে থাকিতে চাই। ভিক্ষু সন্ন্যাসীর স্নিগ্ধ দৃষ্টি এবং সুমিষ্ট ব্যাবহার সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করিল। সকলের সম্মতিক্রমে সন্ন্যাসী মন্দিরে থাকিবার ব্যবস্থা হইলো। অনিচ্ছা সত্ত্বেও চক্রশ্রেষ্ঠ সকলের সহিত রাজি হইলেন।  মুখে-মুখে সমর্থন করিলেও সন্ন্যাসীর মন্দিরে থাকিবার বিষয় নিয়ে চক্রশ্রেষ্ঠ অন্তরে অন্তরে ঘোট পাকাইতে লাগিলেন। কে তিনি? তাহাকে মন্দির পরিষদেরা খাওয়াইবেন। কেন অন্য পুরোহিতদের নিকট তিনি এতো সম্মান পাইয়া থাকেন। একদিন মহাদেবের স্বর্ণ-ডমরু গর্ভগৃহ হইতে নিখোঁজ হইল। অন

#অলৌকিক_অতিলৌকিক#সৌরভ_কুমার_নাথ

|| ভৌতিক | ছোটগল্প || #অলৌকিক_অতিলৌকিক #সৌরভ_কুমার_নাথ রিঙ্কি এখন হিউম্যান সাইকোলজি নিয়ে মাস্টার্স করছে। ভুতের বই পড়ার শখটা বরাবরই ছিল, এখন মাত্রা ছাড়িয়েছে। সেই ক্লাস ফাইভে থাকতে টুকটুকি মাসি জন্মদিনে একটা ভূতের গল্পের বই গিফ্ট করেছিল, কিন্তু তার প্রভাব যে এত সুদূরপ্রসারী হবে, কস্মিনকালেও সেকথা ভাবতে পারিনি রিঙ্কির মা। এখনো ছোট বোনকে ফোনে গাল দিতে একটুও কসুর করে না; তোর জন্যে মেয়েটার এই দশা! বিশ্ব-ব্রহ্মান্ড ঘুরে ভূত খুঁজে চলেছে। রিঙ্কি এখন "গোস্ট আট মোস্ট" নামের একটি গ্রূপের সদস্য। ভূতের খবর পেলে সেখানে তার যাওয়া চাই-ই-চাই। এইতো বছর খানের আগের ঘটনা, সামিলপুর নামে পুরুলিয়ার একটা অখ্যাত গ্রামে নাকি কাকে ভূতে পেয়েছে, মেয়ে দলবল নিয়ে সেখানে হাজির। সব দেখে শুনে বুঝলো যাকে ভূতে পেয়েছে বলে রটানো হয়েছে, ভদ্রলোক স্কিটজোফ্রেনিয়ার রুগী। এই কথা বলাতে পাড়ার লোকজন তো তাদের এই মারে কি সেই মারে! কোনো মতে আদ্রা স্টেশনে পৌঁছে রাতের ট্রেন ধরে বাড়ি। গত সেমের আগে হঠাৎ করে খবর এলো কলকাতার একটা বনেদী বাড়িতে নাকি ভূতের উপদ্রব হয়েছে, সেখানেও বিন বুলায়া মেহেমানেরা হাজির। বাড়িতে বয়স্ক দুই বুড়ো বুড়িকে ভ

#সুমিতের_গোয়েন্দাগিরি#সৌরভ_কুমার_নাথ

|| কিশোর সাহিত্য | ছোটগল্প || #সুমিতের_গোয়েন্দাগিরি #সৌরভ_কুমার_নাথ এই দরজাটা বন্ধ থাকে কেন মা? একটা টেনিস বল হাতে নিয়ে খেলতে খেলতে জিজ্ঞাসা করলো সুমিত। বাড়িটা অনেক পুরোনো, ছোটবেলা থেকে এই বাড়ির আনাচে কানাচে ঘুরে খেলেছে সুমিত কিন্তু জ্ঞান হওয়ার পর থেকে ওই দরজাটা বন্ধ দেখেছে। একান্নবর্তী পরিবারের দ্বিতীয় বৌমা অনিতা। ছাদ থেকে আনা কাপড়চোপড় ভাঁজ করতে করতে প্রশ্নটা শুনেও না শোনার ভান করে অনিতা বলে তুই চান করতে গেলিনা এখনো? দুটো তো বাজতে চললো। সুমিত দের সামার ভেকেশন চলছে, বাড়ি থাকলেই হুড়োহুড়ি ছোটাছুটি লেগেই আছে। আরো কটা বাচ্চা কাচ্চা আছে বাড়িতে তবে সুমিতই লিডার। বন্ধ দরজাটা খুব টানে সুমিতকে, কি জানি কি আছে ওই বন্ধ দরজার পেছনে। সুমিত ভুতের সিনেমায় দেখেছে ওই সব ঘরে ভুত থাকে। তালাটাও অনেক পুরোনো, কবে খোলা হয়েছে ভগবান জানে? সুমিত চিলেকোঠার ঘরে একটা পুরোনো বাক্স পেয়েছে ওতে অনেক পুরোনো জিনিসের মধ্যে একগোছা চাবিও ছিল। সুমিত স্নান করে খেয়েদেয়ে চলে যায় সেই ঘরে সাথে পাখি আর টিনা। পাখি সুমিতের কাকার মেয়ে আর টিনা পাখির মাসির মেয়ে, পাখির মাসীরা দুদিন হল ঘুরতে এসেছে ওদের বাড়িতে। ওদের মধ্যে গোপন আলোচনা চলত

#ভুটানি#সৌরভ_কুমার_নাথ

#ভুটানি #সৌরভ_কুমার_নাথ ভরা শ্রাবণ মাস চলছে। রোদ ঝলমলে দুপুর। হঠাৎ মায়ের ইচ্ছে সবাই মিলে ছবি তুলতে যাওয়া হবে। যেই সময়ের কথা বলছি তখন ছবি তুলতে যাওয়া মানে বিরাট ব্যাপার। সবাই মিলে সেজে গুজে স্টুডিও তে ছবি তুলতে যাওয়া, তারপর সেই ছবি বাড়িতে আসলে সবাই মিলে দেখা, একটা ছোটখাটো উৎসব ছিল। ব্যাপারটা নিয়ে আমাদের ভাই বোনদের মধ্যে খুশির কোনো অভাব ছিল না। সবাই তখন মোটামুটি যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে।  বাবা কে যখন বলা হল, এক কথায় সেই প্রস্তাব নাকচ হয়ে গেল। এই ভর বর্ষায় বিকালে এতটা দূর যাওয়া ঠিক হবেনা। শুনে দিদির কি কান্না, কপালের টিকলিটাও খুলে ফেলেছে তখন। সবাই তখন মোটামুটি বুঝে গেছে, বাবা না করেছে মানে আর যাওয়া হবেনা। সবাই মনমরা হয়ে বসে আছে। একটাই পথ ঠাকুমাকে দিয়ে যদি বাবাকে বলানো যায়। আমরা চারজন গিয়ে ধরলাম ঠাকুমাকে। শেষ পর্যন্ত ঠাকুমা রাজি হল।      খোকা! হ্যারা যাইতে চায়, রোজ রোজ তো চায়না। লইয়া যা না। পোলাপানের মুখগুলান দেহন যায়না। কি যে কউ না মা এই ভর বর্ষায় কেই এত দূরে হাইটা যায়, যহন তহন বৃষ্টি নামতাসে।  তুই হ্যাগো লইয়া যা। কিচ্ছু হৈবোনা। অত:পর ছবি তুলতে যাওয়া হবে, সেই প্রস্তাবে সিলমোহর পড়ল

#অদ্ভুত_দেখতে_লোকটা!#সৌরভ_কুমার_নাথ

#অদ্ভুত_দেখতে_লোকটা! #সৌরভ_কুমার_নাথ কিছু কিছু ঘটনা বড়ই অদ্ভুত হয়। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে এই সব ঘটনাকে শুধু বর্ণনা দেওয়া যায়, কিন্তু অর্থ খোঁজা বড়ই কঠিন। ধানবাদে কাপড়ের ব্যাবসা অমিতের। শান্তিপুর, ফুলিয়ার তাঁতের শাড়ি ওখানকার বড় বড় দোকানে নিজেই পৌঁছে দেয় ও। নিজের পুঁজি তাই ব্যাবসা বেশ বড় হলেও নিজেই পুরোটা সামলায়। কাজের সূত্রে যাতায়াত লেগেই থাকে ওর। যাওয়ার সময় ঠিক থাকলেও ফেরাটা নির্ভর করে ক্লায়েন্ট দের উপর। মাঝে মাঝেই অনেক রাত হয়ে যায় সব সেরে স্টেশনে পৌঁছাতে। সেরকমই ছিল সেই দিনটা। এক বড় ব্যাবসায়ীর সঙ্গে মিটিং সেরে এবং অন্যান্য সমস্ত কাজ গুটিয়ে যখন অমিত ধানবাদ স্টেশনে পৌঁছালো তখন রাত দেড়টা বেজে গেছে। কোনোমতে স্টেশন থেকে একটা টিকিট কেটে একটা সংরক্ষিত কামরায় উঠে পড়ে অমিত। এ কাজ সে আগেও করেছে, ট্রেনে উঠে টিটির হাতে কিছু গুঁজে দিলে একটা ভালো সিটের ব্যাবস্থা হয়ে যায়। সমস্যায় যে পড়েনি তা নয়, তবে সেই অনুপাতে খুব কম। এভাবে হলে আর কে রিজার্ভেসনের ঝক্কি নেবে, মনে মনে হাসে অমিত। সেদিনও কাজ হয়ে গেল, মিলেও গেল একটা সিট। একেবারে আপার। এই একটা বড় সমস্যা অমিতের, যতই জার্নিতে অভ্যস্ত হোক না কেন, রাতে কিছুতে

#ভুটানি#সৌরভ_কুমার_নাথ

#ভুটানি #সৌরভ_কুমার_নাথ ভরা শ্রাবণ মাস চলছে। রোদ ঝলমলে দুপুর। হঠাৎ মায়ের ইচ্ছে সবাই মিলে ছবি তুলতে যাওয়া হবে। যেই সময়ের কথা বলছি তখন ছবি তুলতে যাওয়া মানে বিরাট ব্যাপার। সবাই মিলে সেজে গুজে স্টুডিও তে ছবি তুলতে যাওয়া, তারপর সেই ছবি বাড়িতে আসলে সবাই মিলে দেখা, একটা ছোটখাটো উৎসব ছিল। ব্যাপারটা নিয়ে আমাদের ভাই বোনদের মধ্যে খুশির কোনো অভাব ছিল না। সবাই তখন মোটামুটি যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে।  বাবা কে যখন বলা হল, এক কথায় সেই প্রস্তাব নাকচ হয়ে গেল। এই ভর বর্ষায় বিকালে এতটা দূর যাওয়া ঠিক হবেনা। শুনে দিদির কি কান্না, কপালের টিকলিটাও খুলে ফেলেছে তখন। সবাই তখন মোটামুটি বুঝে গেছে, বাবা না করেছে মানে আর যাওয়া হবেনা। সবাই মনমরা হয়ে বসে আছে। একটাই পথ ঠাকুমাকে দিয়ে যদি বাবাকে বলানো যায়। আমরা চারজন গিয়ে ধরলাম ঠাকুমাকে। শেষ পর্যন্ত ঠাকুমা রাজি হল।      খোকা! হ্যারা যাইতে চায়, রোজ রোজ তো চায়না। লইয়া যা না। পোলাপানের মুখগুলান দেহন যায়না। কি যে কউ না মা এই ভর বর্ষায় কেই এত দূরে হাইটা যায়, যহন তহন বৃষ্টি নামতাসে।  তুই হ্যাগো লইয়া যা। কিচ্ছু হৈবোনা। অত:পর ছবি তুলতে যাওয়া হবে, সেই প্রস্তাবে সিলমোহর পড়ল

#পটলবাবুর_পটল_তোলা#সৌরভ_কুমার_নাথ

#পটলবাবুর_পটল_তোলা #সৌরভ_কুমার_নাথ ছোটবেলায় একটা ঘটনা খুব মনে পড়ছে। তখন ক্লাস এইটে পড়ি। যতটা না পড়ি তার চাইতে গুন্ডামি বেশী করতাম স্কুলে। সহপাঠীদের মধ্যে বাপি আমার বেশ কাছের বন্ধু ছিল। আমার বইয়ের ঐতিহাসিক চরিত্র গুলোতে কাল্পনিক কথোপকথন লিখতাম, যেমন মহারানা প্রতাপ ঘোড়ার উপরে বসে আছেন, আমি লিখলাম "এই ঘোড়া বেশি নড়াচড়া করিসনা পরে যাবো যে" বা গান্ধীজি এবং মোহাম্মদ আলী জিন্না দুজনে দাঁড়িয়ে একটা ছবি তাতে লিখলাম " চলো জিন্না ভাই আমরা ভারত ভাগ করে খাই" ইত্যাদি ইত্যাদি। একদিন বাপি একটা বেশ বড় কাগজ গোল করে পেঁচিয়ে নিয়ে স্কুলে এসেছে। কাগজটার উপরে লেখা " হ্যারিকেন বাজার পত্রিকা" যেই রকম খবরের কাগজ থাকে ঠিক তেমন। আর যেমন টপিক থাকে সেই জায়গায় লেখা রয়েছে " কাতলার ধাক্কায় বিরাট জাহাজ ডুবি" বা "পিঁপড়ের ধাক্কায় লুঙ্গির লরি উল্টে গেল কাঁঠাল তলায়"। আমরা তো পড়ে হাসতে হাসতে লুটোপুটি অবস্থা। বাকি ফাঁকা প্লট আমি লিখলাম। "সন্ধে বেলায় পটল তুলতে গিয়ে নিজেই পটল তুললেন পটল বাবু" প্রতিবেদন টা ছিল এইরকম। নিজস্য সংবাদদাতা, ফুলিয়া  তারিখ-ছয় জুন,1996  প্রতিদিনে

#অনু_গল্প#বিসর্জন#সৌরভ_কুমার_নাথ

#অনু_গল্প #বিসর্জন #সৌরভ_কুমার_নাথ তখন সন্ধের সূর্য টা ডুবতে বসেছে। আমি একটা ছোটো ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে মাঝ গঙ্গায়। চারিদিক শান্ত নিস্তব্ধতা কখন সন্ধের আলোটাকে চুরি করে নিল জানিনা। জলের ছপাক ছপাক আওয়াজ টা যেনো দাড় টাকে ছুয়ে আরো পরিণত হয়েছে। দূরের আলোটা নদীর গা বেয়ে এক আলোআধারী, যেন সোনার নৌকা ভাসিয়েছে। চাঁদটা আজ একফালি, জোছনার খামতি নেই। সাদা কালো সেই জলের স্রোত জীবনের স্রোতের মতোই ছলছলিয়ে এগিয়ে চলেছে। আমি এসেছি কিছু বিসর্জন দিতে। আমার প্রিয় কিছু, এমন কিছু যা সবার সামনে দেওয়ার নয়। হয়তো বুকের অচিন গহ্ববরের জমে থাকা অভিমান বা কোনো অবক্ত ভালোবাসার অস্ফুট মুহুর্ত। ছুড়ে দিলাম সেই আংটিটা, আমাদের মধ্যেকার সেই জীর্ণ সেতু। অন্ধকারের মাঝেই কোথায় একটা ঝুপ করে আওয়াজ হলো, শেষ হলো সেই অদৃশ্য বন্ধন। আর সেই কবিতার খাতাটা, তোমার বালিশের তলা থেকে চুরি করেছিলাম। তৃতীয় পাতায় সেই ভাজ করা শুকনো গোলাপ ফুলটা, আর অজস্র স্মৃতি কথা। তাকেও ভাসিয়েছে আজ। অনেকটা হালকা হালকা লাগছে এখন। তবে জানিনা কেন চোখের জল বাঁধ মানছেনা। দূরের আকাশ টা আরো স্পষ্ট আর নির্মেঘ। একটা বড় নৌকায় তখন বেজে চলেছে"মেরা কুছ সামান তুমহারে পা

#অনুগল্প#মোটিভ#সৌরভ_কুমার_নাথ

#অনুগল্প #মোটিভ #সৌরভ_কুমার_নাথ বাথটব টার ভেতরে ডুবে বসে আমি তখনও হেসে চলেছি। বাইরে একটা শোরগোলের আওয়াজ পাচ্ছি। ছুরিটা টাবের ডান পাশে রাখা, টাবের জলটা আমার হাতে রাঙানো রক্তের রঙে লাল। সুমনার লাশ টা বাথরুমের দরজার ঠিক মাঝখানে উপরের দিকে হাঁ করে পড়ে আছে। বাথরুমের বাইরে লবির কিছু সাজানো জিনিসপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে পরে আছে। মাথায় প্রচন্ড যন্ত্রনা করছে আজ। বা হাতে স্কচের স্বচ কাঁচের বোতলের থেকে তরল টা একটা গ্লাসে ঢেলে আস্তে আস্তে সিপ নিতে থাকলাম আর ঘটনাক্রমে ভাবতে থাকলাম।  ঘরে যখন ঢুকলাম ডুপ্লিকেট চাবিটা দিয়ে তখন রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা বাজে। আস্তে করে ঢুকে দরজাটা লক করলাম। ঢুকতে গিয়ে আমার অবর্তমানে বাড়িতে অন্য পুরুষের উপস্থিতি অনুভব করলাম। অবাক হয়নি জানতাম আমি। ওটাই মোটিভ। জানোয়ার টা লবি তে সোফায় বসে মোবাইল নিয়ে ব্যাস্ত । আস্তে করে পেছনে গেলাম। হাতেই ছুরিটা আলোতে চক চক করে উঠলো। মুখ টা চেপে ধরে আলতো করে একটা টান গলায়। গলাটা কেটে হাঁ হয়ে গেল। ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরোতে থাকলো। কোনো আওয়াজ হয়নি। মুখটা আস্তে করে ছেড়ে দিয়ে দেখলাম ঘাড় টা কাৎ হয়ে পড়ে গেলো। সোফাটা রক্তে ভেসে যাচ্ছে। একটু আওয়াজ করলাম। এবার সু

#ছোট_গল্প#বিজানুর_বিষে_নারদ#সৌরভ_কুমার_নাথ

#ছোট_গল্প #বিজানুর_বিষে_নারদ #সৌরভ_কুমার_নাথ সমগ্র দেশ করোনা বিজানুর কারণে লক ডাউন চলছে। মানুষেরা সব ঘরের ভেতরে। সবচাইতে সমস্যায় পড়েছেন নারদ মশাই। দেবদূত হিসাবে ওনার একটা বড় দায়িত্ব পালন করতে হয়, তা হল সংবাদ সংগ্রহ বা মানুষ ও দেবতাদের তথ্যের আদান প্রদান করা।সাংবাদিক ভাইয়াদের মতো কাছে তো আই কার্ড নেই তাই কিভাবে ভগবানের নাম প্রচার তাই নিয়ে খুব চিন্তায় আছেন ভদ্রলোক। এমন সময় নারায়ণ পত্নী কে নিজের অবস্থার কথা জানালেন নারদ মশাই। মাতা এমত অবস্থায় কি করা যায়? আমি আর কি বলি বলুন তো। আপনি একবার ওনার সাথে কথা বলুন। নারায়ণ! নারায়ণ!  প্রভু এখন আমি কি করি লক ডাউন নিয়ে খুব সমস্যায় পড়েছি। সে সেদিন নারায়নপুর গ্রামে গেছিলাম, রাস্তায় দাঁড়িয়ে একটু জিরিয়ে নিচ্ছি হটাৎ দেখি নীল জামা পড়া একটি ছেলে কাপড়ে মুখ বাধা। বললে কি দাদু এসব ফেন্সি ড্রেস কম্পিটিশন টন আছে নাকি? এই সময় লোকে ঘরে বসে আছে আপনি সেজেগুজে কোথায় চললেন? আর সাজটাও হয়েছে একেবারে ব্যান্ড পার্টির মতো। বাড়ি যান তাড়াতাড়ি। আমি বললাম বাবা কিছু মনে কোরোনা আমি একটু মন্দিরের পুরোহিত মশাইয়ের সাথে কথা বলবো।  আবার এসব কোরোনা টোরোনা কেন? আর পুরুত মশাই কে বাড়ি পা

#ছোট_গল্প#রমেন_বাবুর_অন্তর্ধান#সৌরভ_কুমার_নাথ

#ছোট_গল্প #রমেন_বাবুর_অন্তর্ধান #সৌরভ_কুমার_নাথ রমেন বাবুর বাড়ি বাগবাজারে কিন্তু লোহাপট্টিতে কাজের সূত্রে কলেজস্ট্রিট এলাকায় একটা পাইকারি লোহার গুদামে অন্যসব কর্মচারী দের সাথেই থাকতে হয়। বহুদিনের কর্মচারী এবং শিক্ষিত মানুষ হিসাবে ওই গুদামের যাবতীয় দায়িত্ব রমেন বাবুর হাতে। ম্যানেজার একজন আছেন বটে কিন্তু দায়িত্ব রমেন বাবুর ঢের বেশি। যথেষ্ট বিশ্বস্ত মানুষ হিসাবে শেঠ ওনাকে পুরোপুরি ভরসা করেন। আর করবেন নাই বা কেন, প্রায় পঁচিশ বছর হয়ে গেল এই গোডাউনটাই ওনার জীবন। সেই ছোট্ট বয়স থেকে এই ব্যাবসার নাড়ি নক্ষত্র গুলে খেয়েছেন। বড় শান্ত স্বভাবের মানুষ কোনো দিন কোনো কর্মচারীর সাথে দুর্ব্যবহার করতে শোনা যায়নি। শেঠ অনেক দায়িত্ব দিতে চেয়েছেন কিন্তু রমেন বাবু অস্বীকার করে বলেন, "এই সাধারণ মানুষটাকে অসাধারণ করার দরকার নেই সাহেব। আমি এখানেই ঠিক আছি।" এহেন রমেন বাবু হটাৎ একদিন নিখোঁজ হলেন। অনেক খোঁজাখুঁজি হল। বাড়িতে খবর নেওয়া হল। কিন্ত কোনো খবর পাওয়া গেলোনা। মারওয়াড়ি শেঠ নিজে অনেক চেষ্টা করলেন কিন্তু সব চেষ্টাই বিফল হলো। আরো একটা খবর সবার চোখে পড়লো বিশ্ব বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক সুজিত ভট্টাচার্য নিজ বাসভব

#উপলব্ধি#অনুকল্প#সৌরভ_কুমার_নাথ

#উপলব্ধি #অনুকল্প #সৌরভ_কুমার_নাথ পৃথিবীতে যখন এসেছিলাম, মানুষের সাথে পরিচয় করে আসিনি। খুব কান্না করতে করতে এসেছিলাম, তবু সবাই হেসেছিল খুশি হয়ে। প্রতি ক্ষণে ঠেকে ঠেকে এবং মা বাবার সহযোগিতায় আস্তে আস্তে বেড়েছি সময়ের নিয়মে। কখনো পুড়িয়েছি হাত কখনো মাথা ফটিয়েছি খেলার ছলে। তখনো পৃথিবী কে খুব সুন্দর লাগতো। সারাদিন খেলে বেড়ানো আর অজানা কে জানার নেশায় লুকিয়ে কখনো গঙ্গার পারে বা বন্ধুবান্ধবের সাথে বিড়ির টান। না জীবন অতটাও সোজা নয়। ক্লাসে অনেক বন্ধুর আত্মকেন্দ্রিকতা আর কিছু হৃদয় খোলা বন্ধুর সহাবস্থান বুঝতে শিখিয়েছে কোনটা ভুল কোনটা ঠিক। এভাবেই দিন দিন শিক্ষা নিয়ে চলেছি সমাজ থেকে। এখন অনেকটাই বড়ো হয়েছি। ভুল ঠিকের মাঝেও একটা অবস্থান আছে আবিষ্কার করছি এবং তা হল যুগের সাথে পা মেলানো। সবাই যা বলছে তাই সত্যি, তা সে সত্যি নাই বা হল। এই তুই বেশি বকছিস! বেড়ে পাকা হয়েছিস না? আর বেশি বাড়াবাড়ি করিস না, নয়তো ফল ভুগতে হবে। চুপচাপ বাড়ি যা। এখন ভয় হয়, সত্যি টা কি সত্যিই সত্যি নাকি মিথ্যেটাকে মিথ্যে বলে ভাবতে হবে। খুব জটিল এই মানসিকতাকে যে খুব সরল ভাবে মেনে চলবে সেই সঠিক এবং এই সমাজে চলার উপযুক্ত। আমি সোজা পথে হে

#ছোট_গল্প#অমলের_সেই_দিনটা#সৌরভ_কুমার_নাথ

#ছোট_গল্প #অমলের_সেই_দিনটা #সৌরভ_কুমার_নাথ অমল যখন হেড অফিস থেকে বেরোলো তখন প্রায় সাড়ে ছটা বাজে। ধর্মতলা থেকে শিয়ালদা যেতে হবে তার পর আবার সাতটার শান্তিপুর লোকাল। আকাশটাও কেমন যেন থমকে আছে। আকাশে মেঘ বেশি নেই বটে তবুও কেমন যেন গুমরে রয়েছে। সেই সকাল ছটায় বেরোনো তার মধ্যে আবার এতদূর আসার অভ্যাস নেই, খুব ক্লান্ত লাগছিল অমলের। সারাদিন ঠিক করে খাওয়াও হয়নি ওর। অফিস থেকে এতদূর অফিসের কাজে আসতে হবে শুনে বাকিরা পালিয়ে গেলেও অফিসের বয়স্ক বড় বাবুর অনুরোধ ফেলতে পারেনি অমল। গত বছরই এসিস্টেন্ট হিসাবে অফিসের এস্টাব্লিশমেন্ট ডিপার্টমেন্টে যোগদান করেছে। চতুর্থ শ্রেণীর যে কর্মচারী টি এই কাজটি করত বর্তমানে পা ভেঙে বাড়িতে, অগত্যা। সকালেই পৌঁছে যাবার কথা কিন্তু কপালের নাম গোপাল। রেল বহির্ভুত কারণে বেশ কয়েক ঘণ্টা ট্রেন লেট। তার পর আবার বাস-ট্রাম চেনা নেই, অনেক কষ্ট করে শেষ পর্যন্ত লাঞ্চের সময় গিয়ে কোনো মতে অফিসে পৌছালো অমল। অনেক সকালে বেরিয়েছে, আর বরাবরই বাইরের খাবার খাওয়ার অভ্যাস নেই পেট রোগ অমলের তাই রাস্তায় কিছু খাওয়া হয়নি। যে ভদ্রলোক শান্তিপুরের দায়িত্বে আছেন তার টিফিন করা শেষ হয়নি অগত্যা আরো আধ ঘন্টা অ

#অসুখ

#অসুখ #ছোট_গল্প #সৌরভ_কুমার_নাথ অনেক স্বপ্ন থাকে মানুষের জীবনে। বলাইয়ের ও ছিল, খুব সাদা মাঠা কিছু। একটা ভালো চাকরি, মাথার উপরে ছাদ, একটা ছোট সংসার আর একটু ভালোবাসা। নিজের দায়িত্বগুলো পূরণ করার পর যদি সময় পায় তবে নিজের সুপ্ত বাসনা গুলোকে সার্থক হতে দেখা এটাও তার মধ্যে একটা। স্বপ্ন দেখার অধিকার সকলের থাকলেও সার্থকতাটা অনেক অংশে নিজের উপর নির্ভর করে, তবে কিছু কিছু স্বপ্ন আছে যা পূরণ হওয়ার উপর বোধ হয় মানুষের হাত থাকেনা। অপূর্ণ থাকা আলাদা বিষয়, কিন্তু অনেক অংশে সার্থক হওয়ার পরে যখন সেই স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়, সেই আঘাত টা অনুভূত হয় বুকের পাঁজরের ভিতরে। কোনোদিন ভালো ছাত্র হয়ে উঠতে পারেনি বলাই। একটা সাধারণ ছাত্র যেভাবে বেড়ে ওঠে ঠিক সেইভাবেই মাধ্যমিক পাস করে দ্বিতীয় বিভাগে। বাড়ির থেকে একটা চাপ ছিল বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে হবে, নয়তো ভবিষ্যৎ অন্ধকার। গ্রামের বাইরে একটা কলেজে ভর্তি হতে হয় শুধুমাত্র বিজ্ঞান বিভাগে সুযোগ পাওয়ার জন্য। উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পরে সেই কলেজ থেকেই পাস কোর্সে বিজ্ঞান নিয়ে স্নাতক হওয়া। যখন সমস্ত পথ শেষ হয়ে যাবে মনে হচ্ছে ঠিক সেই সময় হঠাৎ এক বাল্য বন্ধুর কাছে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়া