Posts

#ঘুণ ধরা সুর

#ঘুণ ধরা সুর #সৌরভ ঘুণ ধরা বাঁশিটা পরে আছে পাশে। এই বাঁশিতে যে জাদু আছে! বারে বারে এসেছ সেই বাঁশির সুরে মোহিত হয়ে। আজ পুরোনো হয়েছে, তাই বোধহয় জাদু কমেছে তার।  কালো সেই ঈশান কোনে ঘন অন্ধকারে তোমার সেই উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতন চক্ষু যুগোল। বাঁশির করুন সুরে তোমার চোখের কোনে যে মুক্তের মতন ঝরে পড়া অশ্রুবিন্দু। আমায় পাগল করেছে। সেই ভালবাসা মনের কোণে সাজিয়ে রাখা আছে। ঝরে পরা তারা আর বৃষ্টির মাঝে তোমার মনের অনুভূতিটাকে চুরি করে, জোছনার আলোতে ধরা পরে গেছি। এখন শুধু ভালোবাসা টাকে ভালো বাসা করে নিতে গিয়ে অন্তবিহীন পথ ধরেছি। সেই পথের সীমারেখা অতিক্রম করতে গিয়ে যীশুর সাথে কথা হয়েছে সামনা সামনি। রাস্তার পাশে পরে থাকা সেই ঘেও রুগীটা, যাকে দেখে সবাই দুর্গন্ধ্যে দূর দিয়ে গেছে, তাকে জড়িয়ে ধরে আশ্বাস দিয়েছি ভালোবাসার। স্বপ্নের সমারোহে আমার ছোট্ট একটি ভালোবাসা, তার দাম কি আর হবে? ললিতা, বিশখা আর যারা তোমার সখী তোমায় সঙ্গ দিয়েছে, দুষেছে আমায় বদনাম করেছে,  বলেছে "তোমার বাঁশিতে জাদু আছে তুমি মন্তর করেছ আমার সখিকে"। জানিনা কি জাদু আছে বাঁশিতে, তবে তোমার চোখের গহীন অন্দরে কোথায় যেন জাদু আছে। কাল কাল কর

দুধেল গাই

#দুধেল_গাই #সৌরভ_কুমার_নাথ গোয়ালেরা আজ ধর্ণায় সব, দুধ দোয়াবেনা আর। লাগলে লাথি পশ্চাতেতে, হজম করা ভার। ভোট পুকুর নাইতে নেমে সাঁতার কাটা দায়। দুধেল গাইয়ের লাথি খেয়ে পরান বুঝি যায়। এই গরুর দুধ ভালো খেতে বড়োই সাধ। খিলখিলিয়ে উঠলো গরু, ভেঙে সকল বাঁধ। খিস্তি খাস্তা হজম করে দুধ দোয়ানো চাপ। কাজ করতে যাওয়া তো নয়, কন্যা দায়ে বাপ। গরুর আমি গরুর তুমি গরুর শিঙের ফের। শিঙ বুঝে তাই চলতে হবে, অভিজ্ঞতা চাই ঢের। মুখে মুখে চলতে পারে, দাঁড়িয়ে গালি খান। গুঁতোতে যদি চলে আসে সোজা পালিয়ে যান। এমন ভাবেই চলবে বুঝি আমার দেশের কাজ। গরুর দালাল গুলোর মাথায়, পড়েনা কেন বাঁজ মাথা যারা, প্রয়োজনীয় নির্দেশ গুলো দিক। দুস্টু গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল আমার মতে ঠিক।

#চক্রশ্রেষ্ঠ_ও_সন্ন্যাসী #সৌরভ_কুমার_নাথ

#চক্রশ্রেষ্ঠ_ও_সন্ন্যাসী  #সৌরভ_কুমার_নাথ বহুদিন পূর্বের কথা। কাশী রাজ্যের এক অখ্যাত গ্রামে চক্রশ্রেষ্ঠ নামে এক ব্রাহ্মণ সস্ত্রীক বাস করিতেন। গ্রামের শিব মন্দিরে তিনি প্রধান পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করিতেন। পূজা পদ্ধতিতে কোনো ভুল না থাকিলেও, মন্দিরের অন্যান্য পূজারীদের নিকট চক্রশ্রেষ্ঠ গ্রহণযোগ্য ছিলেন না। কারণ একটাই, লোভ! চক্রশ্রেষ্ঠ ভয়ানক লোভী ছিলেন। যজমানকে ভুল বুঝাইয়া ঈশ্বরের নামে তাহার সর্বস্ব লুট করিতেন। সাধারণত দরিদ্র গ্রামবাসীরাই তাহার লোভী ক্ষুধার ভেট চরাইতেন। একদিন এক সন্ন্যাসী আসিয়া জুটিলেন মন্দিরে। বলিলেন, আমি এই মন্দিরে থাকিতে চাই। ভিক্ষু সন্ন্যাসীর স্নিগ্ধ দৃষ্টি এবং সুমিষ্ট ব্যাবহার সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করিল। সকলের সম্মতিক্রমে সন্ন্যাসী মন্দিরে থাকিবার ব্যবস্থা হইলো। অনিচ্ছা সত্ত্বেও চক্রশ্রেষ্ঠ সকলের সহিত রাজি হইলেন।  মুখে-মুখে সমর্থন করিলেও সন্ন্যাসীর মন্দিরে থাকিবার বিষয় নিয়ে চক্রশ্রেষ্ঠ অন্তরে অন্তরে ঘোট পাকাইতে লাগিলেন। কে তিনি? তাহাকে মন্দির পরিষদেরা খাওয়াইবেন। কেন অন্য পুরোহিতদের নিকট তিনি এতো সম্মান পাইয়া থাকেন। একদিন মহাদেবের স্বর্ণ-ডমরু গর্ভগৃহ হইতে নিখোঁজ হইল। অন

#অলৌকিক_অতিলৌকিক#সৌরভ_কুমার_নাথ

|| ভৌতিক | ছোটগল্প || #অলৌকিক_অতিলৌকিক #সৌরভ_কুমার_নাথ রিঙ্কি এখন হিউম্যান সাইকোলজি নিয়ে মাস্টার্স করছে। ভুতের বই পড়ার শখটা বরাবরই ছিল, এখন মাত্রা ছাড়িয়েছে। সেই ক্লাস ফাইভে থাকতে টুকটুকি মাসি জন্মদিনে একটা ভূতের গল্পের বই গিফ্ট করেছিল, কিন্তু তার প্রভাব যে এত সুদূরপ্রসারী হবে, কস্মিনকালেও সেকথা ভাবতে পারিনি রিঙ্কির মা। এখনো ছোট বোনকে ফোনে গাল দিতে একটুও কসুর করে না; তোর জন্যে মেয়েটার এই দশা! বিশ্ব-ব্রহ্মান্ড ঘুরে ভূত খুঁজে চলেছে। রিঙ্কি এখন "গোস্ট আট মোস্ট" নামের একটি গ্রূপের সদস্য। ভূতের খবর পেলে সেখানে তার যাওয়া চাই-ই-চাই। এইতো বছর খানের আগের ঘটনা, সামিলপুর নামে পুরুলিয়ার একটা অখ্যাত গ্রামে নাকি কাকে ভূতে পেয়েছে, মেয়ে দলবল নিয়ে সেখানে হাজির। সব দেখে শুনে বুঝলো যাকে ভূতে পেয়েছে বলে রটানো হয়েছে, ভদ্রলোক স্কিটজোফ্রেনিয়ার রুগী। এই কথা বলাতে পাড়ার লোকজন তো তাদের এই মারে কি সেই মারে! কোনো মতে আদ্রা স্টেশনে পৌঁছে রাতের ট্রেন ধরে বাড়ি। গত সেমের আগে হঠাৎ করে খবর এলো কলকাতার একটা বনেদী বাড়িতে নাকি ভূতের উপদ্রব হয়েছে, সেখানেও বিন বুলায়া মেহেমানেরা হাজির। বাড়িতে বয়স্ক দুই বুড়ো বুড়িকে ভ

#সুমিতের_গোয়েন্দাগিরি#সৌরভ_কুমার_নাথ

|| কিশোর সাহিত্য | ছোটগল্প || #সুমিতের_গোয়েন্দাগিরি #সৌরভ_কুমার_নাথ এই দরজাটা বন্ধ থাকে কেন মা? একটা টেনিস বল হাতে নিয়ে খেলতে খেলতে জিজ্ঞাসা করলো সুমিত। বাড়িটা অনেক পুরোনো, ছোটবেলা থেকে এই বাড়ির আনাচে কানাচে ঘুরে খেলেছে সুমিত কিন্তু জ্ঞান হওয়ার পর থেকে ওই দরজাটা বন্ধ দেখেছে। একান্নবর্তী পরিবারের দ্বিতীয় বৌমা অনিতা। ছাদ থেকে আনা কাপড়চোপড় ভাঁজ করতে করতে প্রশ্নটা শুনেও না শোনার ভান করে অনিতা বলে তুই চান করতে গেলিনা এখনো? দুটো তো বাজতে চললো। সুমিত দের সামার ভেকেশন চলছে, বাড়ি থাকলেই হুড়োহুড়ি ছোটাছুটি লেগেই আছে। আরো কটা বাচ্চা কাচ্চা আছে বাড়িতে তবে সুমিতই লিডার। বন্ধ দরজাটা খুব টানে সুমিতকে, কি জানি কি আছে ওই বন্ধ দরজার পেছনে। সুমিত ভুতের সিনেমায় দেখেছে ওই সব ঘরে ভুত থাকে। তালাটাও অনেক পুরোনো, কবে খোলা হয়েছে ভগবান জানে? সুমিত চিলেকোঠার ঘরে একটা পুরোনো বাক্স পেয়েছে ওতে অনেক পুরোনো জিনিসের মধ্যে একগোছা চাবিও ছিল। সুমিত স্নান করে খেয়েদেয়ে চলে যায় সেই ঘরে সাথে পাখি আর টিনা। পাখি সুমিতের কাকার মেয়ে আর টিনা পাখির মাসির মেয়ে, পাখির মাসীরা দুদিন হল ঘুরতে এসেছে ওদের বাড়িতে। ওদের মধ্যে গোপন আলোচনা চলত

#ভুটানি#সৌরভ_কুমার_নাথ

#ভুটানি #সৌরভ_কুমার_নাথ ভরা শ্রাবণ মাস চলছে। রোদ ঝলমলে দুপুর। হঠাৎ মায়ের ইচ্ছে সবাই মিলে ছবি তুলতে যাওয়া হবে। যেই সময়ের কথা বলছি তখন ছবি তুলতে যাওয়া মানে বিরাট ব্যাপার। সবাই মিলে সেজে গুজে স্টুডিও তে ছবি তুলতে যাওয়া, তারপর সেই ছবি বাড়িতে আসলে সবাই মিলে দেখা, একটা ছোটখাটো উৎসব ছিল। ব্যাপারটা নিয়ে আমাদের ভাই বোনদের মধ্যে খুশির কোনো অভাব ছিল না। সবাই তখন মোটামুটি যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে।  বাবা কে যখন বলা হল, এক কথায় সেই প্রস্তাব নাকচ হয়ে গেল। এই ভর বর্ষায় বিকালে এতটা দূর যাওয়া ঠিক হবেনা। শুনে দিদির কি কান্না, কপালের টিকলিটাও খুলে ফেলেছে তখন। সবাই তখন মোটামুটি বুঝে গেছে, বাবা না করেছে মানে আর যাওয়া হবেনা। সবাই মনমরা হয়ে বসে আছে। একটাই পথ ঠাকুমাকে দিয়ে যদি বাবাকে বলানো যায়। আমরা চারজন গিয়ে ধরলাম ঠাকুমাকে। শেষ পর্যন্ত ঠাকুমা রাজি হল।      খোকা! হ্যারা যাইতে চায়, রোজ রোজ তো চায়না। লইয়া যা না। পোলাপানের মুখগুলান দেহন যায়না। কি যে কউ না মা এই ভর বর্ষায় কেই এত দূরে হাইটা যায়, যহন তহন বৃষ্টি নামতাসে।  তুই হ্যাগো লইয়া যা। কিচ্ছু হৈবোনা। অত:পর ছবি তুলতে যাওয়া হবে, সেই প্রস্তাবে সিলমোহর পড়ল

#অদ্ভুত_দেখতে_লোকটা!#সৌরভ_কুমার_নাথ

#অদ্ভুত_দেখতে_লোকটা! #সৌরভ_কুমার_নাথ কিছু কিছু ঘটনা বড়ই অদ্ভুত হয়। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে এই সব ঘটনাকে শুধু বর্ণনা দেওয়া যায়, কিন্তু অর্থ খোঁজা বড়ই কঠিন। ধানবাদে কাপড়ের ব্যাবসা অমিতের। শান্তিপুর, ফুলিয়ার তাঁতের শাড়ি ওখানকার বড় বড় দোকানে নিজেই পৌঁছে দেয় ও। নিজের পুঁজি তাই ব্যাবসা বেশ বড় হলেও নিজেই পুরোটা সামলায়। কাজের সূত্রে যাতায়াত লেগেই থাকে ওর। যাওয়ার সময় ঠিক থাকলেও ফেরাটা নির্ভর করে ক্লায়েন্ট দের উপর। মাঝে মাঝেই অনেক রাত হয়ে যায় সব সেরে স্টেশনে পৌঁছাতে। সেরকমই ছিল সেই দিনটা। এক বড় ব্যাবসায়ীর সঙ্গে মিটিং সেরে এবং অন্যান্য সমস্ত কাজ গুটিয়ে যখন অমিত ধানবাদ স্টেশনে পৌঁছালো তখন রাত দেড়টা বেজে গেছে। কোনোমতে স্টেশন থেকে একটা টিকিট কেটে একটা সংরক্ষিত কামরায় উঠে পড়ে অমিত। এ কাজ সে আগেও করেছে, ট্রেনে উঠে টিটির হাতে কিছু গুঁজে দিলে একটা ভালো সিটের ব্যাবস্থা হয়ে যায়। সমস্যায় যে পড়েনি তা নয়, তবে সেই অনুপাতে খুব কম। এভাবে হলে আর কে রিজার্ভেসনের ঝক্কি নেবে, মনে মনে হাসে অমিত। সেদিনও কাজ হয়ে গেল, মিলেও গেল একটা সিট। একেবারে আপার। এই একটা বড় সমস্যা অমিতের, যতই জার্নিতে অভ্যস্ত হোক না কেন, রাতে কিছুতে